হোভারবাইক এবং হোভারবোর্ড স্বপ্নের উড়ন্তযান এখন বাস্তব

যারা নিয়ত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির খবর রাখেন তাদের জানতে আর বাকী নেই যে মানুষ এখন হোভারবোর্ড তৈরি করে ফেলেছে যা দিয়ে তারা বাতাসে ভেসে যাতায়াত করতে পারে। তবে হোভারবোর্ড প্রযুক্তি এখনও যথেষ্ট পরিপূর্ণতা পায়নি। জনসাধারণ্যে উন্মুক্তও হয়নি। মাত্র একমাস আগে ক্যানাডিয়ান নাগরিক আলেক্সান্ড্রু ডুরু তার নিজের তৈরি হোভারবোর্ড দিয়ে ৯০৫ ফিট দূরত্ব অতিক্রম করে গিনিজ ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডে হোভারবোর্ডে করে সবচে বেশী দূরত্বের যাত্রার রেকর্ড করে নিয়েছে। সে এই দূরত্ব অতিক্রম করেছে নদীর উপর দিয়ে। অর্থাৎ সেই দিন আর দূরে নয় যেদিন বাসার ছাদ থেকে আপনি হোভারবোর্ডে করে ৫ বা ১০ কিলোমিটার দূরের অফিসে টুক করে উড়ে চলে যেতে পারবেন, কিংবা আপনার গার্লফ্রেইন্ডের ১০ তলা উঁচু ভবনের জানালায় গিয়ে লুকিয়ে দেখা করতে পারবেন!

যদিও আলেক্সান্ড্রু ডুরু তার এই উড়ন্তযানকে হোভারবোর্ড বলে নাম দিয়েছে তবে কিকস্টার্টার*ওয়েবসাইট-এ সম্প্রতি একদল প্রযুক্তিবিদ ঠিক এমনই একটি যান জনসাধারণ্যের জন্য তৈরি করার প্রকল্প সাবমিট করেছে। এই যন্ত্রটিকে তারা হোভারবোর্ড না বলে বরং হোভারবাইক বলতেই আগ্রহী। আমিও আলেক্সান্ড্রু ডুরুর এই যানটিকে হোভারবাইক বলতেই বেশি আগ্রহী কেননা হোভারবোর্ড হওয়া উচিত স্কেটবোর্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। স্কেটবোর্ডের কথাই যখন উঠলো, তখন ব্যাক টু দ্য ফিউচার টু (১৯৮৯-এর নাম করা সাই-ফাই মুভি)-এর সেই উড়ন্ত স্কেটবোর্ড বা হোভারবোর্ডের কথা মনে না করে উপায় নেই। সেই উড়ন্ত স্কেটবোর্ডের আদলে লেক্সাস তৈরি করেছে হোভারবোর্ড। এই হোভারবোর্ডটির একটি টিজার ভিডিও তারা ইউটিউবেই পাবলিশ করেছে। তবে এই হোভারবোর্ড নিয়ে পথে ঘাটে ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্নটা এখনও সুদূরপরাহত, কেননা এটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড ছাড়া উড়তে পারে না।

৯০-এর দশকের অনেক সাই-ফাই মুভির গ্যাজেটগুলো এখন আমাদের হাতের মুঠোয়। অনেকটা যেন আমরা এখন সেইসব সাই-ফাই মুভির কাল্পনিক জগতেই বসবাস করছি। সেইদিন কি আর খুব বেশী দূরে যখন জন লুক পিকার্ড ও তার টিমের মতো আমরা স্পেশশিপ-এ করে ঘুরে বেড়াবো মহাশূন্যের অলি গলিতে?

(কিকস্টার্টার হলো পাবলিক ফান্ডের মাধ্যমে প্রজেক্টের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ যোগার করার একটি অনলাইন মাধ্যম বা গেটওয়ে। প্রযুক্তি ও ফিল্ম মেকিং থেকে শুরু করে যেকোন ধরণের সৃষ্টিশীল প্রকল্পের জন্য আপনার যদি অনেক টাকার দরকার হয় সেক্ষেত্রে আপনি কিকস্টার্টারে আপনার প্রজেক্টের বর্ণনা সাবমিট করে জনগণের থেকে ফান্ডিং পেতে পারেন। ২০০৯ এ যাত্রা শুরু করার পর বিগত ছয় বছরে কিকস্টার্টারের মাধ্যমে প্রায় ৮৭০০০ সৃষ্টিশীল প্রকল্পের ফান্ডিং হয়েছে। এসব প্রকল্পে প্রায় ২০০ কোটি টাকা দিয়েছে আপনার বা আমার মতো উননব্বই লক্ষ মানুষ। অর্থাৎ টাকার অভাবে আপনার স্বপ্নের প্রজেক্টটি করতে পারবেন না, এরকম ভাবার যৌক্তিকতা বা অযুহাত আর আপনার নেই।)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।